শফিক আজাদ, উখিয়া: 

উখিয়া উপজেলার উপকূলীয় জালিয়া পালং ইউনিয়নের মনখালিতে পিতৃহীন দুই নাবালকের সম্পত্তি অাত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়,মনখালির গর্জনবনিয়া গ্রামের মৃত মোস্তাফিজুুরর রহমানের ছোট ছেলে মোঃ শহিদুল্লাহ গত বৎসর অাকষ্মিক গাছ ডাল ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনায় মারা যায়। মারা যাওয়ার সময় তার স্ত্রী অার দুই শিশু কন্যা সন্তান রেখে যান। শহিদুল্লাহর মৃত্যুর পর তার বড় ভাই মাষ্টার শাহ অালম অার মুফিদুল অালম মিলে মৃত শহিদুল্লাহর পৈতৃক সম্পত্তি থেকে তার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানদের বঞ্চিত করার পায়ঁতারা চালায়।কিন্তু এঘটনায় শহিদুল্লাহর স্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করলে মাস্টার শাহ অালম ও তার ভাই মুফিদুল অালম শহিদুল্লাহর স্ত্রীর অংশটুকু দিতে রাজি হয়।কিন্তু তার দুই সন্তান বড় মেয়ে অাফরোজা জাহান শান্ত,ছোট মেয়ে তাসফিয়া জাহান বয়স ৬ বৎসর অার ছোট মেয়ে তাসফিয়ার বয়স ৪ বছর বলে জানায় তাদের মা রুমেনা বেগম। কিন্তু তাদের অংশ দিতে বিভিন্ন অজুহাত দেখায়।সর্বশেষ তুপের মূখে পড়ে শুধু স্ত্রীর অংশটুকু দিতে রাজি হলেও এতিম সন্তানদের বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। আর নিহতের স্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া জমি গুলো যা অন্যের দখলিভুক্ত বলে জানায়। বিক্রি করে টাকা ভাগ-ভাটোয়ারার সময় মাস্টার শাহ অালম নিদির্ষ্ট মূল্য থেকে টাকা কম দেয়। মৃত শহিদুল্লাহর স্ত্রী রুমানা বেগম তার কারণ জানতে চাইলে মাষ্টার শাহ অালম বলেন, ভাই শহিদুল্লাহ মারা যাওয়ার অাগে নাকি তার থেকে টাকা ধার নিয়েছিল,সেই টাকা কর্তন করে নিয়ে নিছে বলে দাবি করেন তিনি। মৃত শহিদুল্লাহর স্ত্রী রুমানা বেগম অারো জানান,তার দুই সন্তানদের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করলে গত রমজান মাসে মাষ্টার শাহ অালমের ছোট ভাই মুফিদুল অালম শহিদুল্লাহর স্ত্রীকে টানা হেচড়া করে বাড়ি থেকে বের দেয়।এ ঘটনায় রুমেনা বেগম উখিয়া থানার এস অাই মঈন উদ্দিনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। মাষ্টার শাহ অালম ও তার ভাই মুফিদুল অালম শহিদুল্লাহর
স্ত্রী বাড়ি থেকে বের করে দিলে রুমেনা বেগমের বড় ভাই নুরুল হক তাদের বাড়িতে এনে তার বোন কে তার দুই শিশু সন্তানসহ অাশ্রয় দেয়। এ যাবৎ তার ভাই নুরুল হক তার এবং অসহায় দুই শিশু সন্তানদের ভরণপোষসহ তাদের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে অাসছেন। তার স্ত্রী অারো জানায়,তার স্বামী শহিদুল্লাহর মৃত্যুর অাগে, চাকমা থেকে পিএফ জায়গা কিনে,যা তার মৃত্যুর পর তার ভাইয়েরা বর্গা দিয়ে ভোগ করছে,কিন্তু তার শিশু সন্তানদের ভরণপোষনের জন্য তার থেকে এক টাকা ও দেয়নি বলে দাবি করেন তার স্ত্রী রুমেনা বেগম। তার স্ত্রী এক পর্যায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহীদুল্লাহ মারা যাওয়ার অাগে প্রায় তিন কানি ভিটা বাড়ী ভোগ করতেন। এবং সুপারি থেকে বছরে প্রায় ৫০/৬০ হাজার টাকা ইনকাম করে সকলের সাথে মিলেমিশে ভোগ করতেন,কিন্তু শহিদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর সম্পূর্ণ মাস্টার শাহ অালম ভোগ করে অাসছেন। এসব ইনকাম থেকে এতিমদের ভরনপোষণের জন্য কোন ধরনের টাকা পয়সা বাবদ কিছুই দেননি। এমনকি পবিত্র ঈদে চাচা,জেঠা এতিমদের কিছু দেওয়া দুরে থাক, কোন ধরণের খোঁজ-খবরও নেয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন,তার এতিম দুই শিশু সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন সনদ গুলোও লুকিয়ে ফেলেছে।
মৃত শহিদুল্লাহর স্ত্রী শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মঈন উদ্দিন এবং উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপরে মৃত শহিদুল্লাহর দুই শিশু সন্তানদের অভিভাবকের দায়িত্বে থাকা জালিয়া পালংয়ের মোঃ রফিকুল হুদা চৌধুরী থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, শহিদুল্লাহর মৃত্যুর পর থেকে তিনি সার্বিক ভাবে তার সন্তানদের কে দেখাশুনা করে অাসছেন। কিন্তু তার ভাইয়েরা তার শিশু সন্তানদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। বর্তমানে শহিদুল্লাহর স্ত্রী ও তার দুই শিশু কন্যা সন্তান রুমেনা বেগমের বড় ভাই নুরুল হকের বাড়িতে অবস্থান করছে করছে এবং প্রায় দীর্ঘ এক বছর ধরে তার ভাই ভরণপোষন দিচ্ছেন বলে জানান রুমেনা বেগম। স্থানীয় একাধীক সূত্রে জানা যায়,শহিদুল্লাহর মুত্যৃর পর থেকে তার ভাইয়েরা তার স্ত্রী অার সন্তানদের কে বঞ্চিত করার জন্য বিভিন্নভাবে অজুহাত দেখিয়ে অাসছে।
এ ব্যাপরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মুসা নিকট থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত অাছেন,এবং শহিদুল্লাহর স্ত্রী রুমেনা বেগমের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন। এদিকে স্থানীয় মাস্টার সিরাজুল ইসলাম, নুরুল কবির,রশিদ অাহমদ, মোস্তাক, জালাল অারো অনেকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।